শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার ২০ টি সেরা উপায়
প্রিয় পাঠক, আসসালামু আলাইকুম। শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে
চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে
শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
পাশাপাশি অল্প বয়সে কোটিপতি হওয়ার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। তাই শূন্য
থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় ও ব্যবসার কেীশল সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি
মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ করছি।
কনটেন্ট সূচিপত্র: শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার ২০ টি সেরা উপায়
ভূমিকা
‘কোটিপতি’ বলতে সেই সব ব্যক্তিবর্গকে বোঝায় যার মোট মূল্য বা সম্পদ ১ মিলিয়ন বা
তার বেশি হয়ে থাকে। শুধুমাত্র টাকার সঙ্গে এই বিষয়টি জড়িত নয়, বরং একটি নির্দিষ্ট
স্তরের প্রতিপত্তি ও জড়িত রয়েছে। অতীতে মুদ্রাস্ফীতির কারণে বিভিন্ন দেশের জাতীয়
মুদ্রার মূল্য অনেক কম ছিল।
যেসব দেশে মুদ্রার মূল্য কম, সেখানে কোটিপতি হওয়ার জন্য খুব বেশি পরিমাণ টাকার
প্রয়োজন পড়ে। যেমন: ইরান, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ইত্যাদি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে
শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট স্ট্র্যাটেজি ও মাইন্ডসেট থাকলে
আপনিও কোটিপতি হতে পারবেন।
শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায়- অল্প বয়সে কোটিপতি হওয়ার উপায়
বর্তমান পৃথিবীতে আমরা সকলেই ধনী হতে চাই। আমরা প্রত্যেকেই সুন্দর একটি জীবনের
স্বপ্ন দেখি। অনেকেই বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান।
কিন্তু পর্যাপ্ত টাকা না থাকলে এগুলো বাস্তবায়ন করা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
আজকের এই আর্টিকেলটি লেখার পূর্বে আমরা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যক্তিদের
জীবনী ও তাদের শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার রহস্য সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছি।
তো চলুন জেনে নেওয়া যাক, শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায় গুলো কি কি এবং কি কি
গোপন নিয়ম ফলো করে কিছু মানুষ খুব অল্প বয়সে কোটিপতি হতে পারে-
সঠিক পেশা বাছাই করুন
সঠিক পেশা বাছাই করা দ্বারা আমরা বোঝাতে চাচ্ছি, আপনি যে কাজটি করতে ভালোবাসেন,
সেই কাজ বা পেশা ক্যারিয়ার হিসেবে বাছাই করা। কারণ আমরা যদি এমন কোন কাজ করি যেটা
আমরা পছন্দ করি না, তাহলে সেই কাজে আমরা মনোযোগ দিতে পারি না। যার ফলে সম্পূর্ণ
একাগ্রতার সঙ্গে সেই কাজটি করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
তাই আপনার সবচেয়ে পছন্দের কাজটিকে পেশা বা ব্যবসা হিসেবে বেছে নিন। শূন্য থেকে
কোটিপতি হওয়ার সর্বপ্রধান উপায় হলো সঠিক পেশা বাছাই করা। নিজের পছন্দের কাজ করলে
আপনি অনেক আনন্দ ও মনোযোগ সহকারে কাজ করতে পারবেন।
কৃতজ্ঞতা ও শুকরিয়া আদায় করা
আপনার কাছে বর্তমান মুহূর্তে যা আছে, যতটুকু আছে সেটার জন্যই মহান সৃষ্টিকর্তার
নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। অকৃতজ্ঞ ও দাম্ভিক মানুষরা কোটিপতি হয়েও আবার পুনরায়
গরীব হয়ে যায়। আপনি জীবনে যা কিছু পেয়েছেন তার জন্য যদি আপনি সৃষ্টিকর্তাকে
ধন্যবাদ জানান, তাহলে তিনিই আপনার জীবনের লক্ষ্য গুলো পূরণ করতে সাহায্য করবেন।
একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করুন
আপনার ব্যবসা সংক্রান্ত আইডিয়া ও লক্ষ্য সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ও নির্দিষ্ট
ধারণা রাখুন এবং আপনি যে সঠিক পথে এগোচ্ছেন সেটি নিশ্চিত করুন। আপনার শূন্য থেকে
কোটিপতি হওয়ার জন্য যে ধারণা বা আইডিয়াই থাকুক না কেন, সেগুলো কিভাবে বাস্তবায়ন
করা যেতে পারে, তা নিয়ে চিন্তা করুন। আপনি যে জিনিসগুলো জীবনে পেতে চান, সেগুলো
বাস্তবায়ন করার জন্য কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
সঞ্চয় করার অভ্যাস গড়ে তুলুন
শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার অন্যতম উপায় হলো প্রতি মাসের ইনকামের অন্তত ১০ শতাংশ
টাকা সঞ্চয়ের জন্য আলাদা করে সরিয়ে রাখা। শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়া সকল সফল
ব্যক্তিদের একটি সার্বজনীন অভ্যাস হলো তারা প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা
সঞ্চয় করেন।
যদি আপনি প্রতিমাসে মোট রোজগারের শুধুমাত্র ১০ শতাংশ টাকা সরিয়ে জমিয়ে রাখেন,
তাতে আপনার সারা মাসের খরচ চালাতে খুব বেশি সমস্যা হবে না। এবং সময়ের সাথে সাথে
আপনি সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে পারবেন।
রোজগারের চেয়ে কম খরচ করুন
রোজগারের তুলনায় কম খরচ করার কথাটি অনেকের কাছে অদ্ভুদ শোনাতে পারে। কারণ এটি
একটি সাধারণ জ্ঞান। কিন্তু বেশিরভাগ তরুন- তরুণীরাই এটি স্বীকার করতে বাধ্য হবেন
যে, তারা যত টাকা রোজগার করেন, তার পুরোটাই তারা খরচ করে ফেলেন। তাদের ধারণা
তাদের ইনকাম বৃদ্ধি হলে তারা টাকা জমাতে পারবেন।
কিন্তু তারা এটা ভুলে যান, ইনকাম বৃদ্ধি হলে তাদের খরচের পরিমাণ ও বৃদ্ধি পাবে।
শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো এটি। যদি আপনি আপনার মাসিক
রোজগারের তুলনায় কম খরচ করেন, তাহলে আপনি অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করতে
পারবেন। যেমন:
- আপনার যদি কোনো ধারদেনা বা ঋণ থাকে তাহলে সেগুলো আস্তে আস্তে পরিশোধ হতে শুরু করবে।
- আপনি টাকা জমাতে শুরু করতে পারবেন।
- আপনার ওপর থেকে অনেক অর্থনৈতিক চাপ কমতে থাকবে।
- আপনার পছন্দের ব্যবসা গুলোর দিকে অগ্রসর হতে পারবেন।
সঞ্চিত টাকা কাজে লাগিয়ে আরো টাকা আয় করুন
শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার সবচেয়ে সেরা উপায় হলো এটি। আপনার সঞ্চিত টাকা গুলো এমন
খাতে ব্যবহার করুন যেন সেখান থেকে আপনি আরো বেশি রোজগার করতে পারবেন। আমরা
অধিকাংশ মানুষ এমন জিনিসপত্রের পিছনে সমস্ত টাকা ব্যয় করে ফেলি, যেগুলোর মূল্য
সময়ের সাথে সাথে কমতে থাকে।
যেমন: দামি মোবাইল ফোন, দামি জামা কাপড় ইত্যাদি। এর পরিবর্তে আপনি এমন কোনো
জিনিসপত্রে টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন, যেগুলোর মূল্য যত দিন যাবে, ততই বৃদ্ধি
পাবে। যেমন: জমিজমা, সোনা এগুলো কিনে রাখা।
স্ক্যামে টাকা বিনিয়োগ করা না করা
অনেকেই লোভের বশবর্তী হয়ে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। কেউ যদি আপনাকে
এইরকম অবিশ্বাস্য প্রস্তাব দেয় যে, তুমি আমাকে ব্যবসা করার জন্য ১০ হাজার টাকা
দাও, তার বিনিময়ে তুমি কিছুদিনে পরেই ১০ লাখ টাকা পাবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এগুলো
স্ক্যাম বা প্রতারণা হয়ে থাকে। তবে এটা ঠিক, মাত্র ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে
আপনি কোটি টাকার ব্যবসা পর্যন্ত দাঁড় করাতে পারবেন।
তবে, তার জন্য সময় এবং কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন হবে। বিশ্বের কোটিপতি
বিনিয়োগকারীরা যেকোন ব্যবসায় টাকা বিনিয়োগ করার পূর্বে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন
করেন। তারা উচ্চ ঝুঁকি নিয়ে রাতারাতি ধনী হওয়ার পরিবর্তে অল্প ঝুঁকি নিয়ে আস্তে
আস্তে অগ্রসর হওয়াকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।
এছাড়াও আপনার টাকা এমন কোনো ব্যবসায় বিনিয়োগ করা একদম ই উচিত হবে না যে ব্যবসা
সম্পর্কে আপনার কোনো ধারণা নেই। যেমন: ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ট্রেন্ডিং। এগুলো
ব্যবসায় অল্প সময়ে প্রচুর টাকা রোজগার করা গেলেও ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেশি। এছাড়াও
আপনি যেকোনো ব্যবসা শুরু করার আগে তাদের উপদেশ বা পরামর্শ নিতে পারেন, যারা
ইতিমধ্যে সেই ব্যবসায় সফলতা অর্জন করেছেন।
প্যাসিভ ইনকামের প্রতি গুরুত্ব দিন
সাধারণত আমরা দুইভাবে ইনকাম করতে পারি। যথা: এক্টিভ ও প্যাসিভ ইনকাম। এক্টিভ
ইনকাম মানে আপনি যতক্ষণ সময়ের জন্য কাজ করছেন, শুধুমাত্র ততটুকু সময়ের জন্যই আপনি
টাকা পাচ্ছেন। যেমন: কোনো দোকান। যতক্ষণ দোকান খোলা আছে এবং আপনি দোকানে বসে
জিনিস বিক্রি করছেন, ঠিক ততক্ষণ ই আপনার ইনকাম হচ্ছে।
কিন্তু যখন আপনার দোকান বন্ধ, তখন আপনার কোনো ইনকাম নেই। অন্যদিকে প্যাসিভ ইনকাম
হলো যেখানে আপনি কোনো কাজ না করলেও সবসময় আপনার ইনকাম হতে থাকে। প্যাসিভ ইনকামের
একটি সেরা উদাহরণ হলো ইউটিউব প্লাটফর্ম। আমরা যখন ইউটিউবে কোনো ভিডিও দেখি তখন
সেই ভিডিওর চ্যানেল কর্তৃপক্ষ হয়তো ঘুমাচ্ছেন।
তবুও তার ভিডিও গুলো আমরা দেখার মাধ্যমে সারাক্ষণ তার প্যাসিভ ইনকাম হচ্ছে।
সুতরাং আপনি যদি শুধুমাত্র একটিভ ইনকামের উপর নির্ভর করেন তাহলে আপনি কখনোই শূন্য
থেকে কোটিপতি হওয়ার যাত্রা শুরু করতে পারবেন না। কিন্তু প্যাসিভ ইনকাম শুরু করার
জন্য শুরুর দিকে অনেক পরিশ্রম ও ধৈর্যের প্রয়োজন হবে।
আপনি যদি শুধুমাত্র একটিভ ইনকামের জন্য কাজ করেন, তাহলে আপনি কাজ করছেন টাকার
জন্য। শুধুমাত্র যেটুকু সময় আপনি কাজ করছেন, ততটুকু সময়ের জন্যই যদি আপনার ইনকাম
সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে এই ছোট্ট জীবনে আপনি কখনোই শূন্য থেকে কোটিপতি সম্ভাবনা
খুবই কম।
শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করুন
আপনি শুনলে হয়তো অবাক হবেন, বিশ্বের প্রায় সমস্ত কোটিপতিরা প্রত্যক্ষ বা
পরোক্ষভাবে শেয়ার বাজারের মাধ্যমে তাদের বিপুল সম্পত্তি অর্জন করেছেন।
প্রত্যক্ষভাবে বলতে নিজে সরাসরি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে এবং পরোক্ষভাবে বলতে
নিজের কোম্পানি কে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত করে।
বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ওয়ারেন বাফেট সরাসরি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে তার
ভাগ্য তৈরি করেছিলেন। এছাড়াও বিলগেটস তার কোম্পানি মাইক্রোসফটকে শেয়ার বাজারে
তালিকাভুক্ত করে তার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন। শেয়ার বাজার হলো এমন একটি স্থান
যেখানে বিভিন্ন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি স্টক এক্সচেন্জ এ নিবন্ধিত থাকে এবং
তাদের শেয়ার কেনা-বেচা করা হয়।
শেয়ার বাজারকে পুঁজিবাজার ও বলা হয়। তবে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার পূর্বে অবশ্যই
শেয়ার বাজার সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। এবং শেয়ার বাজারে বেশি বেশি ট্রেডিং বা
কেনা-বেচা করা যাবে না। তাহলে আপনার অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা
বৃদ্ধি পাবে। আপনি শেয়ার বাজারে টাকা বিনিয়োগ করার জন্য ইনডেক্স ও মিউচুয়াল
ফান্ডের সাহায্য নিতে পারেন।
সবসময় দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা করুন
শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা করতে হবে।
আজ থেকে দশ বছর পর বা ভবিষ্যতে আপনি আপনার জীবনটাকে কেমন দেখতে চান, তা সম্পর্কে
পরিকল্পনা ও চিন্তাভাবনা করাকেই দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা বলে। তবে, দীর্ঘমেয়াদি
চিন্তাভাবনা করার জন্য প্রয়োজন ধৈর্য্য। দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা করার অনেক
সুবিধা রয়েছে। যেমন:
দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা ব্যবসায় আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।
- দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনাকে স্পষ্টতা প্রদান করতে ও সঠিক পথে পরিচালনা করতেও সাহায্য করবে।
- দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা করার আরেকটি সুবিধা হলো আপনি বিশদভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবেন।
- দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা করার মাধ্যমে আপনি প্রতিযোগীতামূলক ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন যেটি দীর্ঘদিন পর্যন্ত স্থায়ী হবে।
উন্নত মানসিকতার লোকদের সংস্পর্শে থাকুন
আপনি যদি জীবনে সফলতা অর্জন করতে চান, তাহলে সবসময় চেষ্টা করুন আপনার চেয়ে উন্নত
মানসিকতার লোকদের সাথে মেলামেশা করার। যদি আপনি নিজে সবসময়ের সঙ্গি হিসেবে আপনার
থেকে উন্নত মানসিকতার লোকদের বেছে নেন, তবে আপনিও সেইদিকেই এগোতে শুরু করবেন।
ধৈর্য্য ধারণ করুন
শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার সবচেয়ে কার্যকারী উপায় হলো ধৈর্য্য ধারণ করা। কিছু
জিনিস হতে সময় লাগবেই, তাতে আপনি যতই পারদর্শী হন না কেন বা যতই পরিশ্রম করুন না
কেন। সফলতা পেতে হলে প্রয়োজন অসীম ধৈর্য্য ও উন্মাদ একাগ্রতা। তাই ধৈর্য্য ধারণ
করুন।
প্রচুর বই পড়ুন
বিশ্বের সবচেয়ে সফল ও ধনী ব্যক্তিদের একটি সাধারণ অভ্যাস হলো তারা প্রচুর পরিমাণে
বই পড়েন। কখনো ভেবে দেখেছেন, কোটি কোটি টাকার বাড়িগুলোতে বই রাখার জন্য আলাদা
ঘর কেন থাকে? বেশিরভাগ কোটিপতিরাই প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটা করে বই পড়ে। আপনার
মনে হয়তো প্রশ্ন জাগতে পারে, বিশ্বের সফল ব্যক্তিরা বই পড়াকে এত প্রাধান্য কেন
দেন?
কারণ আপনি যদি বিশ্বের ধনী ও সফল ব্যক্তিদের থেকে শিখতে চান যে, কিভাবে নিজের
জীবনে আরো উন্নতি করা যায় তাহলে আপনি সরাসরি তাদের কাছে শিখতে পারবেন না। কিন্ত
তাদের লেখা বই পড়ে আপনি তাদের জীবন, তাদের ব্যবসায়িক আইডিয়া ও কেীশল সম্পর্কে
অনেক কিছু শিখতে পারবেন।
তারা তাদের সারাজীবনের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বইয়ের মাধ্যমে সবার সামনে তুলে ধরেছেন।
এছাড়াও অনেকেই আছেন যারা বই পড়ে অন্যের ভুল থেকে শিক্ষা নেয়। তাই সফল হতে চাইলে
বই পড়ার অভ্যাসটি নিজের মধ্যে গড়ে তুলুন। আপনি অর্থনীতি ও ব্যবসা সংক্রান্ত
বইগুলো পড়তে পারেন। কিভাবে ধনী হওয়া যায় এ সম্পর্কিত জনপ্রিয় কয়েকটি বইয়ের নাম
হলো:
- Rich Dad Poor Dad.
- The Psychology of Money.
- Think and Grow Rich.
- The Richest Man in Babylon.
নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করুন
একজন সফল উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য আপনাকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দক্ষতা বা
Skill অর্জন করার চেষ্টা করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা অর্জন করার ফলে আপনি
আপনার লক্ষ্যে দ্রুত পৌঁছাতে পারবেন। এছাড়াও আপনাকে সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী প্রকৃতির
মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
ক্যালকুলেটেড রিস্ক নিতে ভয় পাবেন না
আপনি যদি কোটিপতি বা ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তাহলে আপনাকে রিস্ক বা ঝুঁকি নিতেই
হবে। ক্যালকুলেটেড রিস্ক বা ঝুঁকি নেওয়া বলতে যখন কোনো বিষয়ে প্রথমে আমরা জ্ঞান
অর্জন করি এবং ব্যর্থ হলে কি কি ফলাফল ভোগ করতে হতে পারে সেটা মাথায় রেখে কোনো
কাজ করাকে বোঝায়। যেমন: এই ঝুঁকি হতে পারে আপনার পছন্দের ব্যবসায় বিনিয়োগ করা।
রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করুন
রিয়েল এস্টেট ব্যবসা হলো মূলত জমি, ভবন, বাড়ি, ফ্ল্যাট, অফিস ইত্যাদি বাস্তব
সম্পত্তি বেচা, কেনা ও ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা। এই ব্যবসাটি মানুষের মেীলিক চাহিদার
সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং এটি অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসা। আপনি যদি রিয়েল এস্টেট
ব্যবসায় সফলভাবে বিনিয়োগ করতে সক্ষম হন, তাহলে আপনি কোটিপতি বা ধনী ব্যক্তিদের
তালিকায় নিজের নাম লেখাতে পারবেন।
কারণ, সম্পত্তির মূল্য যত দিন যাবে তত বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এছাড়াও, রিয়েল এস্টেট
ব্যবসা হলো একধরনের প্যাসিভ ইনকাম। আপনি আপনার সম্পত্তি বা বাড়ি ভাড়া দিয়ে
প্রতিমাসে প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন।
পোর্টফলিও ও বিনিয়োগে বৈচিত্রতা আনুন
আপনার পোর্টফলিও ও বিনিয়োগে বৈচিত্রতা নিয়ে আনুন। আপনার সমস্ত টাকা একটি মাত্র
ব্যবসায় বিনিয়োগ করার পরিবর্তে বিভিন্ন খাতে টাকা গুলো বিনিয়োগ করে দিন। যেমন:
শেয়ার বাজার, মিউচুয়াল ফান্ড, রিয়েল এস্টেট ইত্যাদি। বিনিয়োগে বৈচিত্রতা আনার
সুবিধা হলো এটি আপনার অর্থনৈতিক ঝুঁকি কমাবে এবং সর্বোচ্চ মুনাফা দেবে। শূন্য
থেকে কোটিপতি হওয়ার অন্যতম উপায় এটি।
নিজেকে জানুন
পেশাগত ও ব্যক্তিভাবে আরো উন্নত হওয়ার জন্য আত্মসচেতনতা অপরিহার্য ভূমিকা পালন
করে। আত্মসচেতনতা বলতে মূলত বোঝায়: নিজের দূর্বলতা ও শক্তি সম্পর্কে সজাগ থাকা।
আপনি যদি আপনার ভালো-মন্দ গুণাবলি সম্পর্কে অবগত থাকেন, তাহলে আপনার এই জ্ঞান কে
কাজে লাগিয়ে একজন সফল ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা হওয়ার যাত্রায় সফলতা অর্জন করতে
পারবেন।
কাজের প্রতি মনোনিবেশ ও শৃঙ্খলা গড়ে তুলুন
আপনি যদি যেকোন কাজ বা ব্যবসায় সফলতা অর্জন করতে চান, তাহলে সেই কাজে আপনার
সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। আপনি হয়তো খেয়াল করেছেন, সম্পূর্ণ মনোযোগ ও একাগ্রতার
সঙ্গে কোনো কাজ করলে সেই কাজটি আপনি কার্যকর ও প্রোডাক্টিভ ভাবে করতে পারছেন।
এছাড়াও কাজের প্রতি মনোযোগ থাকলে সেই কাজে আপনার দ্রুত দক্ষতা তৈরি হবে এবং কাজে
ভুলভ্রান্তি হওয়ার সম্ভাবনা ও অনেক কম থাকবে। অন্যদিকে, শৃঙ্খলা ও
নিয়মানুবর্তিতা সফলতা অর্জনের পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। শৃঙ্খলা হলো যে
কাজটি আপনি করতে চান, সেই কাজটি নিয়ম মেনে প্রতিদিন করা। শৃঙ্খলা ও
নিয়মানুবর্তিতা কাজের প্রতি অজুহাত বা গড়িমসি দূর করে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য পূরণে
সাহায্য করে।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আশা করছি আপনি শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার উপায়, অল্প বয়সে
কোটিপতি হওয়ার উপায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন ও উপকৃত হয়েছেন। যদি
আপনার এই ধরনের বিশ্বস্ত ও তথ্যপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে ভালো লাগে, তাহলে আমাদের
ওয়েবসাইটটি ফলো করতে পারেন।
কারণ আমরা এই ধরনের আর্টিকেল নিয়মিত প্রকাশ করে থাকি। আপনার কোন পরামর্শ বা
মন্তব্য থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। যদি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়ে
থাকেন, তাহলে আপনার প্রিয়জন ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এতক্ষণ মনোযোগ সহকারে
আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url