অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি জেনে নিন

অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি তা সম্পর্কে আপনি জানেন? আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি
এছাড়া সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ, ভবিষ্যতে কোন কাজের চাহিদা বেশি এ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ করছি।

কনটেন্ট সূচিপত্র: অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি

অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি

অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি, বর্তমানে ঘরে বসে টাকা আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ফ্রিল্যান্সিং। বিশেষ করে তরুণদের মাঝে অনলাইনে কাজ করার আগ্রহ প্রতিনিয়তই বেড়ে চলেছে। ফ্রিল্যান্সিং কথাটির সাথে আমরা সকলেই কমবেশি পরিচিত। 

বর্তমানে প্রচুর মানুষ এই ফ্রিল্যান্সিং পেশাকে ফুল টাইম কাজ হিসেবে বেছে নিচ্ছে। আবার কেউ কেউ চাকরির পাশাপাশি অবসর সময়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করছে। ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং এর এতো জনপ্রিয়তার প্রধান কারণ গুলো হলো:
  • ফ্রিল্যান্সিং খাতে প্রচুর পরিমাণে কাজ থাকে। এছাড়াও এর পরিধি ও অনেক বিস্তৃত।
  • এই প্লাটফর্ম থেকে সহজেই এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
  • এই সেক্টরে আপনি নিজের স্কিল বা দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে, ঘরে বসেই কাজ করতে পারবেন এবং প্রচলিত চাকরির চেয়ে কয়েক গুণ বেশি টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
  • ফ্রিল্যান্সিং পেশা একধরনের মুক্তপেশা হওয়ায় আপনি কাজের পরিমাণ, সময় ও অর্থের পরিমাণও নির্ধারণ করতে পারবেন।
মূলত ফ্রিল্যান্সিং বলতে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইন প্লাটফর্মগুলোতে বিভিন্ন ধরনের কাজ করা এবং তার বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করাকেই বোঝায়। কিন্তু অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোতে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার জন্য আপনার একটি নির্দিষ্ট স্কিল বা দক্ষতা অর্জন করা অত্যাবশ্যক। যেকোনো স্কিল শেখার আগে আপনাকে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
কারণ আপনি যদি এমন কোন স্কিল শেখার পেছনে আপনার সময় নষ্ট করেন যেটির মার্কেটপ্লেসে তেমন চাহিদা নেই, তাহলে আপনি এই সেক্টর থেকে খুব বেশি লাভবান হতে পারবেন না। তাই ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শেখার ক্ষেত্রে আপনাকে সেই কাজগুলো শেখার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে যেগুলোর চাহিদা মার্কেটপ্লেসে সবসময় বেশি থাকে। 

ফ্রিল্যান্সিং সাধারণত অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোতে সংঘটিত হয় এবং এখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ থাকে। কিন্তু যারা ফ্রিল্যান্সিং জগতে নতুন এবং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই, তারা ফ্রিল্যান্সিং এর কোন ক্যাটাগরি নিয়ে কাজ শুরু করবেন এটি নিয়ে অনেক কনফিউজ থাকেন। যার ফলে অনেকেই ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুই করে উঠতে পারে না। 

আবার কেউ কেউ কোনো একটি কাজ শুরু করলেও ব্যর্থতার সম্মুখীন হন এবং শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারেন না। তাই আজকে আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০ টি ফ্রিল্যান্সিং কাজের তালিকা নিয়ে, যেগুলোর মার্কেটপ্লেসে চাহিদা সবসময় বেশি থাকে এবং আশা করছি ভবিষ্যতেও এদের চাহিদা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক, অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি:
  • ডিজিটাল মার্কেটিং
  • ওয়েবসাইট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট
  • গ্রাফিক ডিজাইন
  • কনটেন্ট রাইটিং
  • ডাটা এন্ট্রি ও বিশ্লেষণ
  • সাইবার সিকিউরিটি ডেভেলপার
  • মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট 
  • UX/UI ডিজাইন
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ও ম্যানেজমেন্ট

ডিজিটাল মার্কেটিং

বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও অন্যতম ফ্রিল্যান্সিং কাজ হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিং কে অনলাইন মার্কেটিং ও বলা হয়। এখন আপনার মনে হয়তো প্রশ্ন জাগতে পারে যে ডিজিটাল মার্কেটিং কি? চলুন এই বিষয়টি একটু ব্যাখা করি। মার্কেটিং হলো সম্ভাব্য গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য কোনো পণ্য বা সেবার প্রচার প্রচারণা করা। 

সুতরাং, ডিজিটাল মার্কেটিং হলো ডিজিটাল মিডিয়া, যেমন: ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন, ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া, সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে সম্ভাব্য গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য কোনো পণ্য বা সেবার প্রচার প্রচারণা করা। ১৯৯০ এর দশকে ইন্টারনেট বিস্তারের সাথে সাথে ডিজিটাল মার্কেটিং ও সকলের নিকট জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। 
অনলাইনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপস্থিতি রয়েছে। এছাড়াও, জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ ব্যবসা ও প্রতিষ্ঠান গুলো ডিজিটাল মার্কেটার এর সাহায্যে অনলাইনে তাদের প্রচারণার কাজ করে থাকেন। 

মূলত এই কারণেই যত দিন যাচ্ছে, ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদাও ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর আরো একটি চমৎকার বৈশিষ্ট্য হলো এটি শুধুমাত্র একটি কাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক বড় একটি সেক্টর। প্রতিটি সেক্টরের কাজের ক্ষেত্র আলাদা আলাদা। ডিজিটাল মার্কেটিং এর জনপ্রিয় সেক্টর গুলো হলো:
  • সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান (SEO)
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
  • ইমেইল মার্কেটিং
  • ভিডিও এডিটিং
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ও ম্যানেজমেন্ট
উপরে উল্লিখিত কাজগুলোর মধ্যে থেকে যেকোন একটিতে দক্ষতা অর্জন করার মাধ্যমে আপনি একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারবেন এবং প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন। ডিজিটাল মার্কেটিং করার বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম রয়েছে। যেমন: গুগল, ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি। 

আপওয়ার্কের’ তথ্যানুসারে, একজন ডিজিটাল মার্কেটার প্রতি ঘন্টায় ১৫ থেকে ৪৫ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করে থাকেন। সুতরাং, বুঝতেই পারছেন, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা কতটা বেশি।

ওয়েবসাইট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট

অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি এ সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে ওয়েবসাইট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এর কথা চলে আসে। বর্তমানে অন্যতম সেরা ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলোর মধ্যে একটি হলো ওয়েবসাইট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ওয়েবসাইট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কাজের অনেক চাহিদা রয়েছে।

এখন অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান গুলো চান নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তাদের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করতে। এছাড়াও ছোট-বড় ব্যবসায়ী ও ই-কমার্স প্লাটফর্ম গুলো তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এর প্রচারণা ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকেন। যার ফলে প্রতিনিয়তই প্রচুর পরিমাণে নতুন নতুন ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। 

এবং এইসব ওয়েবসাইট ডিজাইন ও তৈরি করার জন্য প্রয়োজন হয় প্রফেশনাল ওয়েব ডিজাইনার ও ডেভেলপার এর। সুতরাং এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে মার্কেটপ্লেসে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর চাহিদা কতটা বেশি। আপনি যদি একজন দক্ষ ওয়েব ডিজাইনার ও ডেভেলপার হতে পারেন, তাহলে আপনাকে টাকার পিছনে ছুটতে হবে না, বরং টাকাই আপনার পেছনে ছুটবে। 

আমাদের দেশে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ শিখে অনেক ফ্রিল্যান্সাররাই মার্কেটপ্লেস থেকে প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করে থাকেন। তবে, একজন ডেভেলপার হওয়ার জন্য আপনাকে অনেক বেশি দক্ষ ও ক্রিয়েটিভ হতে হবে। ওয়েবসাইট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এর জন্য যেগুলো বিষয়ের দক্ষতার প্রয়োজন হবে:
  • প্রোগামিং ল্যাংগুয়েজ, স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গগুয়েজ এবং মার্কাপ ল্যাঙ্গগুয়েজ গুলো সম্পর্কে জানা থাকতে হবে। যেমন: HTML, CSS, Javascript, PHP, MySQL ইত্যাদি।
  • টাইপোগ্রাফি ও কম্পোজিশনে অভিজ্ঞ হতে হবে।
  • CMS প্লাটফর্মগুলোতে, যেমন: ওয়ার্ডপ্রেস এ এক্সপার্ট হতে হবে।
  • UI/UX ডিজাইন সম্পর্কে জানতে হবে।

গ্রাফিক ডিজাইন

ফ্রিল্যান্সিং জগতে বর্তমানে সবচেয়ে বড় ও বিস্তৃত সেক্টর হলো গ্রাফিক ডিজাইন। গ্রাফিক ডিজাইন নামটির সঙ্গে আমরা কমবেশি সকলেই পরিচিত। ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলোর প্রতিটি সেক্টরেই গ্রাফিক ডিজাইনের উপস্থিতি রয়েছে। অনলাইন এবং অফলাইন উভয় সেক্টরেই গ্রাফিক ডিজাইনারদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইনে ভালো দক্ষতা অর্জন করতে পারেন, তাহলে আপনি বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানি গুলোতে উচ্চ বেতনের চাকরি করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি যদি চাকরি করতে আগ্রহী না হন, তাহলে ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও কোম্পানির কাজ করতে পারবেন। 

প্রায় প্রতিটি কোম্পানির ই তাদের লোগো ডিজাইন, পোস্টার ও ব্যানার ডিজাইন এর জন্য একজন গ্রাফিক ডিজাইনার এর প্রয়োজন পড়ে। মূলত এই কারণেই দক্ষ ও অভিজ্ঞ গ্রাফিক ডিজাইনারদের বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস, যেমন: Upwork, fiverr, Freelancer, PeoplePerHour এ চাহিদা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। গ্রাফিক ডিজাইনের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় কাজের তালিকা দেওয়া হলো:
  • লোগো ডিজাইন।
  • বিজ্ঞাপন ডিজাইন।
  • ব্যানার ও পোস্টার ডিজাইন।
  • ইউআই/ইউএক্স।
  • ইলাস্ট্রেশন।
  • বিজনেস কার্ড ডিজাইন ইত্যাদি।
তবে একজন প্রফেশনাল গ্রাফিক ডিজাইনার হওয়ার জন্য আপনার কিছু দক্ষতা থাকতে হবে। এগুলো হলো:
  • গ্রাফিক ডিজাইন টুলস গুলো সম্পর্কে খুব ভালো ভাবে জানা থাকতে হবে।
  • আপনাকে ক্রিয়েটিভ বা সৃজনশীল চিন্তাভাবনার অধিকারী হতে হবে।
  • কালার থিওরি সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে হবে।

কনটেন্ট রাইটিং

ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলোর মধ্যে বর্তমানে সবচাইতে সহজ ও জনপ্রিয় হলো কনটেন্ট রাইটিং বা ব্লগিং। কনটেন্ট রাইটিং এর বিশ্বব্যাপী প্রচুর চাহিদা রয়েছে। যাদের লেখালেখির প্রতি আগ্রহ ও যথেষ্ট দক্ষতা রয়েছে তারা চোখ বন্ধ করে কনটেন্ট রাইটার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।

অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি এই তালিকায় কনটেন্ট রাইটিংকে ১ নম্বরে রাখা উচিত ছিল। কারণ কনটেন্ট রাইটিং বলতে শুধুমাত্র লেখালেখি করাকে বোঝায় না। কনটেন্ট রাইটিং এর মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান ও তথ্য জানতে পারবেন। একটি মানসম্মত কনটেন্ট বা আর্টিকেল লেখার পূর্বে বেশ কিছু খুঁটিনাটি বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হয়।

যেমন: কিওয়ার্ড রিসার্চ, পাঠকরা কোন বিষয় বা টপিক সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন, কোন কোন বিষয়গুলো ট্রেন্ডিং রয়েছে, কনটেন্ট টি এসইও ফ্রেন্ডলি হয়েছে কিনা ইত্যাদি। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কনটেন্ট রাইটার এর ডিমান্ড সবসময় ই বেশি থাকে।

এছাড়াও আপনি যদি একজন ভালো মানের লেখক হয়ে থাকেন, তাহলে নিজের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট পাবলিশ করার মাধ্যমেও গুগল এডসেন্স থেকে প্রতিমাসে কয়েক হাজার ডলার ইনকাম করতে পারবেন। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মতো কনটেন্ট রাইটিং ও অনেক বড় একটি সেক্টর। নিম্নে কনটেন্ট রাইটিং এর প্রধান ৫ টি ক্যাটাগরি ও কাজের ক্ষেত্র গুলো দেওয়া হলো:
  • ওয়েবসাইট কন্টেন্ট রাইটিং
  • আর্টিকেল বা ব্লগ পোস্ট রাইটিং
  • কপিরাইটিং
  • টেকনিক্যাল রাইটিং
  • এসইও কনটেন্ট রাইটিং ইত্যাদি।

ডাটা এন্ট্রি ও বিশ্লেষণ

ডাটা এন্ট্রির কাজটি অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলোর তুলনায় অনেক সহজ একটি কাজ। যার কারণে নতুন ফ্রিল্যান্সাররা এই কাজটি অনেক পছন্দ করেন। ডাটা এন্ট্রি হলো এমন একটি কাজ যেখানে একজন কর্মচারী বিভিন্ন ডাটা যোগ, যাচাই ও সম্পাদনা করে থাকে। 

বেশিরভাগ কোম্পানির ডাটাবেজের ডাটা যোগ করা, বিভিন্ন পরিসংখ্যান যোগ করা ও নোট বা রেকডিং থেকে ডাটা প্রতিলিপি বা Transcribe করার জন্য লোকের প্রয়োজন হয়। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে ডাটা এন্ট্রির প্রচুর কাজ পাওয়া যায়। তবে, ডাটা এন্ট্রির কাজে প্রতিযোগিতা একটু বেশি। ডাটা এন্ট্রির কাজ করার জন্য যেগুলো দক্ষতার প্রয়োজন হবে:
  • মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ও এক্সেলে পারদর্শী হতে হবে।
  • বিভিন্ন টুলস এর ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে।
  • টাইপিং স্পিড ভালো হতে হবে।
অন্যদিকে ডাটা অ্যানালিস্ট এর প্রধান কাজ হলো বিভিন্ন কোম্পানির অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ডেটা গুলো অ্যানালাইসিস বা বিশ্লেষণ করা। এছাড়াও একজন ডাটা অ্যানালিস্ট বা বিশ্লেষক বিভিন্ন উৎস থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করেন। 

বর্তমানে অনেক কোম্পানি তাদের ডাটা অ্যানালাইসিস করার জন্য একজন ডাটা অ্যানালিস্ট হিসেবে ফ্রিল্যান্সারদের ভাড়া করে থাকেন। সুতরাং ডাটা এন্ট্রি ও বিশ্লেষণ করার মাধ্যমেও আপনি আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারবেন।

সাইবার সিকিউরিটি ডেভেলপার

যেহেতু বিশ্বব্যাপী ব্যবসা গুলো ডিজিটালাইজেশন এর দিকে ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে, এক্ষেত্রে সাইবার নিরাপত্তা ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাধারণত সাইবার সিকিউরিটি এর কাজ হলো ইন্টারভিত্তিক তথ্য, ফাইল ও ডকুমেন্টস এর নিরাপত্তা প্রদান করা। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি কোম্পানিই তাদের গ্রাহকদের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে থাকে।

গ্রাহকদের তথ্য বা ডাটার নিরাপত্তা প্রদান করা প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়িক সংগঠন গুলোর অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। এবং সাইবার সিকিউরিটির বিষয়টি নিশ্চিত করতেই সাইবার সিকিউরিটি ডেভেলপার এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে সাইবার সিকিউরিটি ডেভেলপার এর যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। সুতরাং, সাইবার সিকিউরিটি ডেভেলপার হিসেবে দক্ষতা অর্জন করা ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য একটি আদর্শ বিকল্প হতে পারে।

মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট

বর্তমানে প্রায় সকলের হাতেই রয়েছে স্মার্টফোন। আমরা সবাই কমবেশি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ করে থাকি। তাই আপনি যদি প্রোগামিং ভাষায় দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর কাজ শিখতে পারেন। কারণ বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। 

মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপার এর চাহিদা লোকাল এবং ইন্টারন্যাশনাল উভয় মার্কেটপ্লেসেই অনেক বেশি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানি গুলো তাদের সার্ভিস গুলো সম্ভাব্য গ্রাহকদের নিকট সহজে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি করছে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। 

এমনকি, আপনি যদি একটু লক্ষ্য করেন তাহলে দেখতে পারবেন, বর্তমানে অধিকাংশ ব্যাংক গুলোর নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ রয়েছে এবং আপনি চাইলে অ্যাপ ব্যবহার করেও খুব সহজেই লেনদেন করতে পারবেন। সুতরাং, এটি নিঃসন্দেহে বলা যায় মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর চাহিদা দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে। 

আপনি যদি একজন দক্ষ মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপার হতে পারেন, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর থেকে আপনি প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

UX/UI ডিজাইন

তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে বর্তমানে সকল ব্যবসাগুলো অনলাইনেই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করা শুরু করেছে এবং অনলাইন মিডিয়া, যেমন: মোবাইল, ওয়েবসাইট ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের পণ্য বা সেবার প্রচারণা করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় মোবাইল অ্যাপ ও ওয়েবসাইটকে ডিজাইন ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য প্রয়োজন পড়ে UX/UI ডিজাইনার এর। 

UX/UI ডিজাইন এর একটি ভালো দিক হলো বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস গুলোতে UX/UI ডিজাইনার এর প্রতিযোগিতা অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলোর তুলনায় খুব কম। যার ফলে আপনি সহজেই ইউজার ইন্টারফেজ বা UX/UI ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতে পারবেন। লোকাল ও গ্লোবাল উভয় মার্কেটপ্লেসে সবসময় UI & UX ডিজাইনের প্রচুর চাহিদা থাকে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ও ম্যানেজমেন্ট

অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি তালিকার সর্বশেষ ফ্রিল্যান্সিং কাজ হলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ও ম্যানেজমেন্ট। ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যতম জনপ্রিয় ক্যাটাগরি হলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ও ম্যানেজমেন্ট। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। 

বিশ্বব্যাপি এমন অসংখ্য ব্যক্তি এবং সংস্থা রয়েছে যাদের একসাথে অনেকগুলো সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট পরিচালনা করার মতো পর্যাপ্ত সময় বা জ্ঞান থাকে না। তাই তারা সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট পরিচালনা করার জন্য দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার দের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার যে দায়িত্বগুলো পালন করেন:
  • সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট ম্যানেজমেন্ট বা পরিচালনা করা।
  • পেইড মার্কেটিং বা ক্যাম্পেইন ম্যানেজমেন্ট করা।
  • কনটেন্ট রাইটিং।
  • সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল বুস্ট করে ফলোয়ার ও এনগেজমেন্ট বৃদ্ধি করা।
  • নিয়মিত পোস্টিং ও মনিটর করা।
  • সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলো অ্যানালাইসিস বা বিশ্লেষণ করা।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট এর কাজটি তাদের জন্য উপযুক্ত হবে যারা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, লিংকেডিন ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করার দক্ষতা রয়েছে। আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য এই সেক্টরটি বেছে নিতে পারেন। ‘আপওয়ার্ক’ এর মতে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার প্রতি ঘন্টায় ১৫-৩৫ ডলার চার্জ করে থাকেন।

সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ- ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি

এতক্ষণে আমরা আলোচনা করলাম অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কিন্তু অনেকেই এটি প্রশ্ন করে থাকেন, বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ কোনটি, ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি। মূলত উপরে উল্লিখিত অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি এই তালিকার সবগুলো ফ্রিল্যান্সিং কাজই জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ হিসেবে পরিচিত। 
সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ- ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি


যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং একটি বিরাট সেক্টর, সেহেতু নির্দিষ্ট করে যেকোন একটি কাজকে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ হিসেবে অভিহিত করা মোটেই উচিত হবেনা। তাছাড়া মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্সিং কাজের চাহিদা কমবেশি হতে থাকে।

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো- মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করতে চাচ্ছেন। তাদের মনে স্বাভাবিকভাবেই এই প্রশ্নটি আসতে পারে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো। প্রধানত দুটি উপায়ে ফ্রিল্যান্সিং কাজ শেখা সম্ভব। একটি হলো বিনামূল্যে অনলাইনের মাধ্যমে ও অপরটি হলো বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠানে পেইড কোর্স করার মাধ্যমে। 

ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করার আগে প্রথমেই আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে আপনি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের কোন ক্যাটাগরি (ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট) নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন। সেই অনুযায়ী আপনাকে সামনে আগাতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়ে গেলে নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে। 
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো- মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো


আপনি কি কারো সাহায্য সহযোগিতা ছাড়াই শুধুমাত্র অনলাইন প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ শিখতে পারবেন? যদি উওর ‘না’ আসে তাহলে আপনার আশেপাশে কোনো আইটি প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। এছাড়াও আপনি চাইলে আপনার পরিচিত কোনো ফ্রিল্যান্সারের সাহায্য নিতে পারেন।

আর আপনার যদি আইটি প্রতিষ্ঠানে পেইড কোর্স করার জন্য পর্যাপ্ত টাকা বা সুযোগ না থেকে এবং কম্পিউটার সম্পর্কে একটি বেসিক ধারণা থাকলে ফ্রিতে অনলাইন রিসোর্চ বা তথ্যগুলো ব্যবহার করেও ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারবেন। আপনি যে বিষয়ে কাজ শিখতে আগ্রহী, সেই বিষয়ে গুগল বা ইউটিউবে সার্চ করে সেই টপিক সম্পর্কে অসংখ্য তথ্য পাবেন। 

উদাহরণস্বরুপ, আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) শিখতে চান তাহলে সিম্পলি ইউটিউবে সার্চ করতে হবে SEO full course Bangla. তাহলেই আপনি এসইও এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ভিডিও গুলো পেয়ে যাবেন, যেখানে একজন এসইও এক্সপার্ট সেই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে ব্যাখা করেছেন। 

আপনি তাদের ভিডিও গুলো দেখে সে বিষয় সম্পর্কে একটি বিশদ ধারণা পাবেন। ঠিক একই প্রক্রিয়ায় যেকোনো টপিক সম্পর্কে অনলাইনে রিসার্চ করতে হবে। আপনি যে ফ্রিল্যান্সিং স্কিল শিখতে চাচ্ছেন, সে সম্পর্কিত কয়েকটি ইউটিউব চ্যানেল খুঁজে বের করুন এবং নিয়মিত তাদের ভিডিও দেখুন। কোনো প্রয়োজনীয় তথ্য পেলে সেগুলো খাতায় নোট করে রাখুন। 

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এই প্রশ্নটিও অনেকে করে থাকেন। জরুরী নয়, ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য আপনার ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ লাগবেই। আপনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও কিছু কিছু ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে পারবেন। যেমন: কনটেন্ট রাইটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ভিডিও এডিটিং, ইমেইল মার্কেটিং ইত্যাদি।

লেখকের মন্তব্য

আশা করছি আপনি অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন ও উপকৃত হয়েছেন। যদি আপনার এই ধরনের বিশ্বস্ত ও তথ্যপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে ভালো লাগে, তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করতে পারেন।

কারণ আমরা এই ধরনের আর্টিকেল নিয়মিত প্রকাশ করে থাকি। আপনার কোন পরামর্শ বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। যদি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার প্রিয়জন ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এতক্ষণ মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url