গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা, ২ টি নিয়ম জেনে নিন

গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। কিন্তু গর্ভাবস্থায় নারীদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রতিদিন দুধের সাথে জাফরান খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি এখনও গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে না জেনে থাকেন, তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা


সেই সাথে গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার নিয়ম, জাফরান দুধের উপকারিতা ও জাফরান খেলে কি ত্বক ফর্সা হয় কিনা তা সম্পর্কেও আলোচনা করা হবে। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা, ২ টি নিয়ম জেনে নিন

ভূমিকা

একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সুন্দর সময় হলো গর্ভাবস্থা। কারণ এই সময় সে তার ভেতরে অন্য আরেকটি জীবন ধারণ করে। গর্ভাবস্থায় একজন নারীর মনে নানা অনুভূতি একসাথে কাজ করতে থাকে। যেমনঃ আনন্দ, উদ্বেগ, উত্তেজনা ইত্যাদি। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় নারীদের ইস্ট্রোজন হরমোন এর তারতম্যের কারণে মুড স্যুইং হওয়া খুবই সাধারণ একটি বিষয়। 

গর্ভাবস্থায় নারীর সম্ভাব্য যেকোন রকমের ঝুঁকি এড়াতে সর্বাধিক যত্নের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে এই সময় স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া গর্ভবতী মা ও সন্তান উভয়ের জন্যই অত্যন্ত জরুরী। এক্ষেত্রে আয়ুর্বেদে গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা উল্লেখ রয়েছে। অনেক নারী গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার জন্য জাফরান খেয়ে থাকেন। 

জাফরান হলো একটি প্রাকৃতিক ঔষধ যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। জাফরান কে অনেকে কেশর নামে চেনেন। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জাফরান মশলা হিসেবে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও মিষ্টান্নতেও জাফরান ব্যবহার করা হয়। গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে।

গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা- গর্ভাবস্থায় জাফরান খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক। তো চলুন জেনে নিই গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা সম্পর্কেঃ
গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা


মুড স্যুইং ঠিক করেঃ গর্ভাবস্থায় নারীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো মুড স্যুইং হওয়া। কথাটি শুনে আপনি হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন, মুড স্যুইং কি? মুড স্যুইং হলো ঘন ঘন বা দ্রুত মেজাজের পরিবর্তন। আপনার যদি কোন কারণ ছাড়াই ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন হয়ে থাকে, তাহলে সম্ভবত আপনার মুড স্যুইং এর সমস্যা রয়েছে। 
গর্ভবতী মহিলাদের খুব দ্রুত মুড স্যুইং হয়। কখনো তাদের মন খারাপ থাকে আবার কখনো তারা খুব হাসিখুশি থাকে। তাদের এমন মুড স্যুইং হওয়ার প্রধান কারণ হলো গর্ভাবস্থায় নারীদের প্রধান সেক্স হরমোন ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন উৎপাদনের তারতম্য বা উঠানামা করা। এছাড়া পিরিয়ডের সময়ও নারীদের মুড স্যুইং হয়ে থাকে। 

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত জাফরান খেলে এটি আমাদের স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল এর মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং সেরোটেনিন হরমোন এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সেরোটেনিন হরমোন প্রধানত মস্তিষ্কে উৎপন্ন হয় যা আমাদের মধ্যে ভালো অনুভূতির সৃষ্টি করে এবং মুড স্যুইংকে নিয়ন্ত্রণ করে। সেরোটেনিন কে সুখের হরমোন ও বলা হয়। যার ফলে গর্ভবতী নারীদের মুড স্যুইং অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে। জাফরানে এমন কিছু অত্যাবশ্যকীয় অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট উপাদান থাকে যা মুড স্যুইং কমাতে সাহায্য করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় অধিকাংশ নারীদের রক্তচাপ বেড়ে যায়। এর প্রধান কারণ হলো এই সময় শরীরে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিকের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি থাকে। 
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গর্ভাবস্থায় সামান্য পরিমাণে জাফরান খেলে তা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কারণ জাফরাণে রয়েছে অত্যাবশ্যকীয় অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও জাফরান উচ্চ রক্তচাপ থেকে সৃষ্ট হাইপারটেনশন থেকে মুক্তি পেতেও খুবই ভালো কাজ করে।

উচ্চমানের ঘুমের সহায়কঃ জাফরান খাওয়ার আরো একটি উপকারিতা হলো এটি গর্ভবতী নারীদের ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে। অনেক সময় দেখা যায়, গর্ভবতী নারীদের রাতে ভালো ঘুম হয় না, তারা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হতে পারেন না। মূলত, পেটের আকৃতি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বড় হওয়ায় অস্বস্তি বোধ থেকে অনেকেরেই ঘুমের সমস্যা হয়। 

এই সমস্যার সমাধান করতে পারে জাফরান। এক গ্লাস দুধের সঙ্গে এক চিমটি জাফরান মিশিয়ে পান করলে তা গর্ভবতী নারীদের ভালো বা উচ্চমানের ঘুম হতে সাহায্য করবে। এছাড়াও জাফরান ডিপ্রেশন বা মানসিক অবসাদ, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা কমায় যেটি সর্বোপরি গর্ভবতী নারীদের ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।

হার্ট বা হৃদযন্ত্র ভালো রাখেঃ গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরো একটি উপকারিতা হলো জাফরান হার্ট বা হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। গর্ভবস্থায় অনেক নারীরই ফাস্টফুড, অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার, মিষ্টি, টক জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে যায়। যার ফলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড এর মাএা বেড়ে যায় এবং হার্টের ক্ষতি হয়। 
এক্ষেত্রে রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে জাফরান। healthline এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত দুধের সাথে এক চিমটি জাফরান মিশিয়ে পান করলে এটি গর্ভবতী মা এবং সন্তান উভয়েরই হার্ট ভালো রাখে। এছাড়াও জাফরান শরীরে সঠিকভাবে রক্ত চলাচল করতে এবং অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সহায়তা করে।

ব্যথা নিরাময় করেঃ গর্ভবতী নারীদের শরীরের বিভিন্ন স্থান, যেমন: পেট, কোমর, জয়েন্ট, হাটু, মাংসপেশীতে অনেক সময় ব্যথা হয়। অনেক সময় এই ব্যথা অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায়। মূলত, হরমোনজনিত সমস্যার কারণেই এই ব্যথা বেদনা হয়ে থাকে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় নারীদের ওজন বেড়ে যাওয়ার ফলেও দেহের বিভিন্ন জয়েন্ট গুলোতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং ব্যথার সৃষ্টি হয়। 

গর্ভাবস্থায় নারীদের এই ব্যথা বেদনা নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জাফরান। জাফরানে রয়েছে ক্রোসিন, ক্রোসেটিন এর মতো অত্যাবশ্যকীয় অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট উপাদান যা প্রাকৃতিক পেইন কিলার হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও জাফরান পেশী নমনীয় করতেও সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা গুলোর মধ্যে এটিকে অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

রক্তশূন্যতা দূর করেঃ বেশিরভাগ গর্ভবতী নারীরা রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া রোগে ভোগেন। সাধারণত দেহে লৌহ বা আয়রনের ঘাটতি দেখা দিলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। গর্ভবতী নারীদের শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দেওয়ার কারণ হলো গর্ভকালীন সময়ে তাদের ক্যালরির সাথে সাথে আয়রন এর চাহিদা ও বেড়ে যায়। কিন্তু খাবার বা সাপ্লিমেন্ট থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন গ্রহণ করতে ব্যর্থ হলে তখন রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। 

এক্ষেত্রে রক্তশূন্যতা দূর করতে ডাক্তাররা আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আপনি জেনে অবাক হবেন, গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন সামান্য পরিমাণে জাফরান খেলে এটি শরীরে আয়রন ও হিমোগ্লোবিন এর ঘাটতি পূরণ করে এবং রক্তশূন্যতা দূর করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার আরো একটি উপকারিতা হলো এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। গর্ভাবস্থায় নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কমে যায়। যার ফলে দেহে বিভিন্ন ধরনের রোগের সংক্রমণ দেখা দেয়। 
যেমন: অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট, হেপাটাইটিস বি, সাধারণ সর্দি কাশি ইত্যাদি। তবে প্রতিদিন সামান্য পরিমাণে জাফরান খেলে এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে এবং দুদিন পরপর অসুস্থ হওয়ার হাত থেকেও বাচাবে।

ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায়ঃ গর্ভাবস্থায় জাফরান খেলে এটি ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, জাফরানে বিদ্যমান অত্যাবশ্যকীয় অ্যান্ট- অক্সিডেন্ট ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ক্ষতিকর ফ্রি র‌্যাডিক্যাল অণু গুলো ধ্বংস করে। 

এছাড়াও গবেষণায় আরো জানা গেছে জাফরান এ বিদ্যমান উপাদান গুলো ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ বা টিস্যু গুলো মেরে ফেলে এবং টিউমার এর বৃদ্ধি দমন বা প্রতিরোধ করে। জাফরান এ বিদ্যমান উপাদান গুলো যে যে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সক্ষম সেগুলো হলোঃ
  • কোলন ক্যান্সার
  • ব্রেস্ট ক্যান্সার
  • ফুসফুট ক্যান্সার
  • প্রোস্টেট ক্যান্সার
  • ব্রেইন ক্যান্সার
আশা করছি বুঝতে পেরেছেন, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে জাফরান খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

ওজন ও ক্ষুধা কমায়ঃ গর্ভাবস্থায় নারীরা ঠিকমতো কাজকর্ম ও চলাফেরা করতে না পারায় অনেকেরই ওজন বেড়ে যায় এবং স্থূলতা দেখা দেয়। যা পরবর্তীতে তাদের দুশ্চিন্তা ও হতাশার কারণ হয়ে দাড়ায়। ডাক্তারদের মতে, গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন সামান্য পরিমাণে জাফরান খেলে এটি অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করবে। 

এছাড়াও জাফরান খেলে ক্ষুধা লাগার মাত্রা কমে যায় এবং রক্তে ভালো কোলেস্টেরল এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। আপনি জাফরান দুধের সাথে মিশিয়েও খেতে পারবেন। আবার সাপ্লিমেন্ট আকারেও জাফরান সেবন করলে স্থূলতা কমাতে এবং নির্দিষ্ট ওজন ধরে রাখতে সাহায্য করবে।

হজম বা পাচনতন্ত্রের উন্নতি করেঃ গর্ভাবস্থায় নারীদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা গুলোর মধ্যে একটি হলো হজমশক্তি দূর্বল হয়ে যাওয়া। মূলত, গর্ভাবস্থায় নারীদের শরীরের মেটাবলিজম প্রক্রিয়া ধীরগতিসম্পন্ন হয়ে পড়ে। যার ফলে হজম বা পাচনতন্ত্র ঠিকভাবে তাদের কার্য সম্পাদন করতে পারে না। 

গবেষকদের মতে, প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ জাফরান খেলে এটি হজম বা পাচনতন্ত্রের উন্নতি করে এবং শরীরের মেটাবলিজম এর গতি বৃদ্ধি করে। গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসেবে এটিও বিবেচিত।

জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম

জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম? জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানার পূর্বে আপনাকে জাফরান খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। জাফরান খাওয়ার বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে। তার মধ্যে সহজ ২ টি উপায় সম্পর্কে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। জাফরান খাওয়ার উপায় গুলো হলোঃ
জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম

দুধের সাথে জাফরান মিশিয়ে পান করা:

প্রথমে একটি পাত্রে এক গ্লাস পরিমাণ দুধ নিন। তারপর চুলায় কিংবা গ্যাসে দুধ গরম করতে দিন। দুধ গরম হতে শুরু করলে দুধের সাথে এক চিমটি জাফরান যোগ করুন এবং ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
দুধের রং হলুদ বর্ণ ধারণ করলে চুলা থেকে নামিয়ে নিয়ে পান করুন।

চায়ের সাথে জাফরান মিশিয়ে পান করা:

প্রথমে এক কাপ চা বানিয়ে নিন। তারপরে চায়ের মধ্যে এক চিমটি জাফরান যোগ করে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন এবং পান করুন।

জাফরান দুধের উপকারিতা

জাফরান দুধের উপকারিতা? জাফরান দুধের সাথে মিশিয়ে পান করার অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। জাফরান দুধের উপকারিতা গুলো দেওয়া হলোঃ
  • নিয়মিত জাফরান দুধ পান দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • জাফরান দুধে অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট উপাদান থাকে যা আমাদের শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
  • জাফরানে দুধে এমন কিছু অত্যাবশ্যকীয় অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট উপাদান থাকে যা আমাদের মেজাজকে উন্নত করে এবং দুশ্চিন্তা, হাইপারটেনশন, ডিপ্রেশন দূর করে।
  • জাফরান দুধ পান করলে দেহ ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ বা টিস্যু গুলো ধ্বংস করে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
  • দুধের সাথে জাফরান মিশিয়ে পান করলে এটি যেীন উত্তেজনা বা কামশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
  • জাফরান দুধ পান করলে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে ও ক্ষুধার মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।
  • জাফরাল দুধ নিয়মিত পান করলে ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত হয় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
  • জাফরান দুধ হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
  • জাফরান দুধ নিয়মিত পান করলে এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • জাফরান দুধ হজম বা পাচনতন্ত্র কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
  • দুধের সাথে জাফরান মিশিয়ে পান করলে এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং মস্তিষ্ক তীক্ষ্ণ করে তোলে।
  • দুধের সাথে জাফরান মিশিয়ে পান করলে এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
  • রাতে ঘুমানোর আগে জাফরান দুধ পান করলে এটি আপনার ঘুমের কোয়ালিটি উন্নত করবে এবং গভীর ঘুমে প্রবেশ করতে সাহায্য করবে।

জাফরান খেলে কি ত্বক ফর্সা হয়

জাফরান খেলে কি ত্বক ফর্সা হয়? জ্বি, হ্যা। নিয়মিত দুধের সাথে জাফরান মিশিয়ে খেলে ত্বক ফর্সা হয় বা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে অধিকাংশ রুপবিশেষজ্ঞ ত্বকের যত্নে জাফরান খাওয়াকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। কেননা, জাফরানে রয়েছে ভিটামিন সি সহ বিভিন্ন অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। 
এছাড়াও জাফরান আমাদের ত্বকে মেলানিন নামক হরমোন এর উৎপাদন কমিয়ে দেয়। আপনারা যারা মেলানিন হরমোন সম্পর্কে জানেন না, তাদের উদ্দেশ্যে বলি, মেলানিন হলো আমাদের ত্বকে উৎপন্ন হওয়া একধরনের প্রাকৃতিক হরমোন যা আমাদের ত্বক, চুল, চোখের রং নির্ধারণ করে থাকে। যার ত্বকে মেলানিন এর উৎপাদন যত বেশি হবে, তার গায়ের রং ততই শ্যামলা বা কালো বর্ণের হবে। 

জাফরান ত্বকে মেলানিন এর উৎপাদন কমিয়ে দেয়, যার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। আশা করছি, জাফরান খেলে কি ত্বক ফর্সা হয় কিনা তা সম্পর্কে আপনাদের সঠিক ধারণা দিতে পেরেছি।

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়? গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্য বাছাইয়ের উপর ভিত্তি করে গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্য ও ত্বকে অনেক প্রভাব পড়ে। মূলত গর্ভাবস্থায় একজন নারী যদি সঠিক ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করে তাহলে গর্ভের বাচ্চার ও শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ভালো হবে। তবে, গর্ভাবস্থায় কোনো নির্দিষ্ট খাবার খেলেই যে বাচ্চা ফর্সা হবে এ উক্তিটির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি বা প্রমাণ নেই। 

তাই গর্ভবতী মায়েদের উচিত হবে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা, যেন আপনাদের গর্ভের বাচ্চার স্বাস্থ্য ভালো হয়। বাচ্চার গায়ের রং, চুলের ধরণ, উচ্চতা, মুখের আকৃতি কেমন হবে তার সম্পূর্ণটাই নির্ভর করছে মহান সৃষ্টিকর্তা এবং আপনার জেনেটিক এর উপর। আশা করছি, গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় তা সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আশা করছি আপনি গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা, জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম, জাফরান খেলে কি ত্বক ফর্সা হয় তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন ও উপকৃত হয়েছেন। গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার ক্ষেত্রে জাফরান এর অবদান অপরিসীম।

বর্তমানে জাফরান খাওয়ার পাশাপাশি রুপচর্চায় জাফরান ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে। তবে, জাফরান খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এবং মাত্রাতিরিক্ত জাফরান সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ডাক্তারদের নিদের্শনা মতে, প্রতিদিন ০.৫- ১.৫ গ্রাম এর বেশি জাফরান খাওয়া উচিত নয়।

যদি আপনার এই ধরনের বিশ্বস্ত ও তথ্যপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে ভালো লাগে, তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করতে পারেন। কারণ আমরা এই ধরনের আর্টিকেল নিয়মিত প্রকাশ করে থাকি। আপনার কোন পরামর্শ বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। যদি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার প্রিয়জন ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এতক্ষণ মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url