গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি তার সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। আজকের আর্টিকেলে আমরা গর্ব অবস্থায় ইসুবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি


সেই সঙ্গে ইসবগুলের ভুসির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও আলোচনা করা হবে। তাই আপনি যদি গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কিনা তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ করছি। তাহলে চলুন আর দেরি না করে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি জেনে নিন

ভূমিকা

ইসবগুলের ভুষি হচ্ছে একধরণের দ্রবণীয় ফাইবার যা আমরা সাইলিয়াম নামক বীজ থেকে পেয়ে থাকি। এটি সাধারণত রেচক বা ল্যাক্সেটিভ (laxative) হিসেবে কাজ করে এবং আমাদের অনেকেরই পরিচিত একটি উপাদান। ইসবগুলের ভূষি (Psyllium Husk) হলো মূলত একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা ইসবগুল গাছের বীজের বাইরের আবরণ থেকে প্রস্তুত করা হয়। 

বিভিন্ন গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়েছে যে ইসবগুলের ভূষি আমাদের মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, যেমন: হার্ট বা হৃদপিণ্ড, অগ্ন্যাশয়, হজম ব্যবস্থা সুস্থ ও সবল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ায় এটি আমাদের মানবদেহকে সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে কাজ করে। তাই গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুষি খাওয়া যাবে কি এবং ইসবগুলের ভুষির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী।

ইসুবগুলের ভুসির উৎপত্তি কিভাবে হয়েছিল

ইসবগুলের ভুসির উৎপত্তি কিভাবে হয়েছিল তার সম্পর্কে জানার অনেকেরই আগ্রহ থাকে। সর্বপ্রথম ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোর আদিবাসী স্থানে ইসবগুলের ভুসির উৎপত্তি হয়েছে। পরবর্তিতে ধীরে ধীরে এটি সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইসবগুলের ভুসির চাষাবাদ করা হয়। 
ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে প্রাচীনকাল থেকেই ইসবগুলের ভুসির চাষ করা হচ্ছে এবং বর্তমানে বাংলাদেশেও এর চাষাবাদ করা হচ্ছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতীয় উপমহাদেশে ষোড়শ শতাব্দীতে ইসবগুলের ভুসির চাষাবাদ করা হয় এবং ধারণা করা হয় যে মোঘল শাসনামলে ভারতীয় উপমহাদেশে ইসবগুলের ভুসির চাষাবাদ শুরু হয়েছিল। 

ইসবগুলের ভুসি সবচেয়ে বেশি পরিমাণে উৎপাদিত হয় ভারতের গুজরাট ও রাজস্থানে। ভারত আজও বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইসবগুল উৎপাদনকারী দেশ। শুধুমাত্র ভারত উপমহাদেশেই ‘প্ল্যান্টাগো’গণের জেনাসের প্রায় ১০টি প্রজাতি পাওয়া গিয়েছে।

ইসুবগুলের ভুসির পরিচিতি কি

ইসবগুলের ভুসির উৎপত্তি কিভাবে হয়েছিল সেটি জানার পরে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক ইসবগুলের ভুসির পরিচিতি সম্পর্কে। ইসবগুল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হল ‘Plantago ovata’ ইসবগুলের গাছ সাধারণত দেড় থেকে দুই ফুট লম্বা হয়ে থাকে। ইসবগুলের ভুসির দুটি কোষ রয়েছে যা প্রায় ৭ থেকে ৮ মিলিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
ইসবগুলের গাছের উপরের খোসা গুলো পিচ্ছিল হয়ে থাকে যেটিই মূলত ইসবগুলের ভুসি হিসেবে বাজারে পাওয়া যায়। ইসবগুলের ভুসি একটি অত্যন্ত উপকারী খাদ্য বা উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রাচীন আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী চিকিৎসা পদ্ধতিতে ইসবগুলের ভুসি বহু শতাব্দী ধরেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

এটি হজম শক্তি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অত্যন্ত কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। ইসবগুল বীজের খোসা গুলো ভুসি হিসেবে খাওয়া হয় এবং এই ভুসি আমরা সাধারণত শরবত বানিয়ে খেয়ে থাকি। এই ভুসি পানিতে ভেজালে একটি জেলির মত পদার্থ তৈরি হয় যা পেটে গিয়ে হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে তুলতে সাহায্য করে।

ইসবগুলের পুষ্টি উপাদান

ইসবগুলের ভুসি বহু পুষ্টি উপাদানে ভরপুর একটি উপাদান। এতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। ইসবগুলের ভুসি মানবদেহের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি কোষ্ঠকাঠিণ্য ও ডায়রিয়া দূর করতে, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

তাই আমাদের প্রত্যেকেরই ইসবগুলের ভুসির পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। কারণ ভুুসিতে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান গুলো মানবদেহের বিভিন্ন উপকার সাধন করে থাকে। নিচে প্রতি এক টেবিল চামচ (১৬ গ্রাম) ইসবগুলের ভুসিতে পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ দেওয়া হলো:
  • ৩৫ শতাংশ ক্যালরি
  • ১ শতাংশ ফ্যাট
  • ০.৩ গ্রাম সোডিয়াম
  • ৪ শতাংশ কার্বোহাইড্রেট
  • ২৫ শতাংশ ফাইবার

গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি

আপনাদের অনেকের মাঝে প্রশ্ন থাকে যে গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি? উত্তর জানার আগে আমাদের জানতে হবে গর্ভাবস্থায় ইসুবগুলের ভুসি খাওয়া আদৌ নিরাপদ কিনা। জি, গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ বা নিরাপদ। 
এটি মূলত প্রাকৃতিক রেচক বা লেক্সিটিভ হিসেবে কাজ করে, যা খাবারের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভোগেন, ডাক্তাররা তাদের ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। গর্ভাবস্থায় প্রায় সকল নারীর যে সাধারণ সমস্যা দেখা দেয় সেটি হল কোষ্ঠকাঠিন্য। 
গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি


এই কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকরী উপাদান হিসেবে আপনি ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন। নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি খেলে আপনি কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা থেকে সম্পূর্ণ নিরাময় পাবেন। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুসি এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে দুই থেকে তিন মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। 

তারপর সেটি সেবন করুন। এই পদ্ধতিতে নিয়মিত কিছুদিন ইসবগুলের ভুসি সেবন করলে খুব সহজেই কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন। ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার পরে এটি আপনার পেটে গিয়ে পানি শোষণ করে মল নরম করে এবং মলাশয় এর মধ্যে সহজেই পরিবহন হতে সাহায্য করে। 

যার ফলে কোষ্ঠকাঠিণ্যর সমস্যা দূর হয়। গর্ভবতী নারীদের কোষ্ঠকাঠিন্য ছাড়াও অনেক সময় রক্তের কোলেস্টেরল এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাদের ক্ষেত্রেও ইসবগুলের ভুসি অনেক কার্যকর একটি খাদ্য উপাদান হতে পারে। কারণ ইসবগুলের ভুসি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার পাশাপাশি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে। আশা করছি আপনি গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি না তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। 

গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি না তা সম্পর্কে জানা শেষে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে। গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এমন অনেক গর্ভবতী মা-বোনেরা রয়েছেন যারা গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন না।

ফলে আপনারা এটি খেতে খুব একটা আগ্রহ প্রকাশ করেন না। তাই সর্বপ্রথম গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে এবং সঠিক নিয়মে, সঠিক পরিমাণে তা খেতে হবে। তো চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা গুলো:

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার অন্যতম উপকারিতা হলো এটি। ইসবগুলের ভুসিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে এবং এটি এক ধরনের প্রাকৃতিক লেক্সাটিভ হিসেবে কাজ করে। যার ফলে মল নরম হয়, মলত্যাগ করা সহজ হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর হয়। এছাড়াও ইসবগুলের ভুষি হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক।

ডায়রিয়ার চিকিৎসায়ঃ গবেষণায় দেখা গেছে ইসবগুলের ভুসি বা সাইলিয়াম ডায়রিয়ার সমস্যা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এটি অতিরিক্ত নরম মল শক্ত করতে এবং মলাশয়ের ভিতর দিয়ে এটি ধীরে ধীরে পরিবহন কর করতে সাহায্য করে।

রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেঃ গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসির আরও একটি অন্যতম উপকারিতা হলো এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে ইসবগুলের ভুষি সেবন করলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ক্ষুধা লাগার মাত্রা কমায় ও দীর্ঘক্ষন পেট ভরে রাখেঃ ইসবগুলের ভুষিতে থাকা ফাইবার, এটি খাবার খাবার পর দীর্ঘক্ষণ আমাদের পেট ভরে রাখে এবং ক্ষুধা লাগার মাত্রা কমাতেও কার্যকর। এটি গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার আরেকটি উপকারিতা।

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়ঃ ইসবগুলের ভুষির আরও একটি উপকারিতা হলো এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ভূসিতে থাকা সলিউবল ফাইবার বা সাইলিয়াম রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমায় এবং দেহ রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।

হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার আরেকটি উপকারিতা হলো এটি হার্ট বা কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য ভালো রাখে। যেকোন রকমের ফাইবার আমাদের হার্টের জন্য উপকারী। এছাড়াও এটি স্ট্রোক, স্থূলতা হওয়ার সম্ভাবনাও কমায়।

প্রসাবের জ্বালাপোড়া রোধ করতেঃ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া, ইনফেকশন সহ বিভিন্ন রকম শারীরিক জটিলতার সৃষ্টি হয়। এই এই পরিস্থিতিতে গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মহিলারা ইসবগুলের ভুসি খেলে তাদের প্রসাবের জ্বালাপোড়া কিছুটা কম হয়।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করেঃ গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত তৈলাক্ত, তেলে ভাজা জাতীয় খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়। আর এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে একটি কার্যকারী উপাদান হল ইসবগুলের ভুসি। গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খেলে এটি গ্যাস্ট্রিকের মত সমস্যা নিরাময় করে ।

ইসবগুলের ভুসির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমরা ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা ও গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি তা সম্পর্কে আলোচনা করলাম। এখন আমরা আলোচনা করব ইসবগুলের ভুষির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে। ইসবগুলের ভুষি আমাদের জন্য অনেক উপকারী হলেও এর বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। 

আপনি যদি ইসবগুলের ভুষি একটানা দীর্ঘদিন যাবত সেবন করেন তাহলে আপনার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তবে আপনি যদি বিরতি দিয়ে দিয়ে এটি খেয়ে থাকেন তবেই কি আপনার জন্য কার্যকরী হবে। 

ইসবগুলের ভুষির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলোর মধ্যে রয়েছে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া, যেমন: চুলকানি, গ্যাস, পেট ফোলা ফোলা ভাব, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদ। কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করতে আপনাকে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে, নিয়মিত হাঁটাচলা ও ব্যায়াম করতে হবে, এবং উচ্চ ফাইবার যুক্ত ফলমূল ও শাকসবজি খেতে হবে।

যেসব ব্যক্তির কোন কিছু গিলতে অসুবিধা রয়েছে, অন্ত্রে বাধা বা খিঁচুনি এসব ব্যক্তিদের ইসবগুলের ভুসি খাওয়া একদম ই উচিত হবে না। এছাড়াও যারা নিয়মিত ভাবে ঔষধ বা সাপ্লিমেন্ট সেবন করছেন, ডায়েবিটিস রোগী যারা ইনসুলিন নিচ্ছেন, শিশুদের ইসবগুলের ভুসি সেবনের আগে অবশ্যই রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।

রাতে খাবারের আগে ইসবগুলের ভুসির খাওয়া যাবে কি

আপনাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে রাতে খাবারের আগে ইসবগুলের ভুষি খাওয়া যাবে কি? আবার অনেকেই এটি নিয়ে কনফিউশনে থাকেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসবগুলের ভুসি খালি পেটে না খাওয়াই উত্তম। 

তাদের মতে খালি পেটে খাওয়ার পরিবর্তে খাবার খাওয়ার পরে এক গ্লাস পানি বা ফলের রসের সাথে এক থেকে দুই চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খেলে সেটি বেশি কার্যকরী হবে। তবে যাদের শারীরিক সমস্যা রয়েছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ইসবগুলের ভুসি খাবেন। এবং সবগুলোর ভুসি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

ইসবগুলের ভুষি খেলে কি মোটা হওয়া যায়

ইসবগুলের ভুসি খেলে কি মোটা হওয়া যায়? এটি লিখেও অনেকে সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে প্রতিনিয়ত সার্চ করে থাকেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ইসবগুলের ভুসি খেলে মোটা হওয়া যায় না। বরং এটি ওজন কমাতে সহায়ক। আমরা অনেকেই ওজন কমানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ডায়েট এবং এক্সারসাইজ রুটিন ফলো করি। 
ইসবগুলের ভুষি খেলে কি মোটা হওয়া যায়


ওজন কমানোর জন্য আমরা ফলমূল, শাক-সবজি সহ বিভিন্ন ধরনের খাবার খাই। এগুলো অবশ্যই আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু এগুলো ছাড়াও আমাদের সকলের পরিচিত আরো একটি খাদ্য উপাদান রয়েছে, সেটি হল ইসবগুলের ভুসি। জি, ইসবগুলের ভুসি ওজন কমাতেও সহায়ক। 

ইসবগুলের ভুসি প্রধান উপাদানই হলো ফাইবার যেটি আমাদের ক্ষুদা লাগার মাত্রা কমায় এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। স্বাভাবিকভাবেই, যদি আমাদের পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা অনুভব হয় এবং ক্ষুধা লাগার মাত্রা কমে যায় তাহলে আমাদের সারাদিনের খাবারের চাহিদা কমে আসবে এবং সর্বোপরি ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন ইসবগুলের ভুসি কিভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ইসবগুলের ভুসি কখন খেতে হয়

ইসবগুলের ভুষি কখন খেতে হয়? এটি খাবারের পর খাওয়াই উত্তম। তবে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা তাদের শরীরের কার্যকারিতার ওপর ভিত্তি করে দিনে সর্বোচ্চ দুই বার খেতে পারবেন। বিশেষজ্ঞরা ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার বেশ কয়েকটি নিয়ম উল্লেখ করেছেন। 

তার মধ্যে একটি হল এক গ্লাস পানি বা ফলের রসের সাথে এক থেকে দুই চামচ ইসবগুলের ভুষি মিশিয়ে খাবার খাওয়ার পরে এটি খাবার পরামর্শ দিয়েছেন‌। এবং ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার পূর্বে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আশা করছি আপনি গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি, গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা, ইসবগুলের ভুসির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন।

যদি আপনার এই ধরনের তথ্যপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে ভালো লাগে, তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করতে পারেন।আপনার কোন পরামর্শ বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। যদি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার প্রিয়জন ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এতক্ষণ মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url